![](https://dainikbagmara.com.bd/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারাঃ
বাগমারায় মাছ চাষীরা দেশি বিদেশী মাছ চাষ ও রপ্তানী করে বিপুল অর্থ উপার্জন করছেন। বর্তমানে এই খাতে প্রতি বছর ৭০০ কোটি টাকার বেশি আয় করছেন মৎস চাষী ও বিপনন কাজে জড়িতরা। এছাড়া মাছের হ্যাচরী থেকে শুরু করে মাছের উৎপাদন বিপনন ও পরিবহন পেশায় যুক্ত আছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। প্রতিদিন এ সংখ্যা বাড়ছে। বলা যায় বাগমারার বেকার সমস্যার অনেকটাই লাগব হচ্ছে এই মৎস খাতের কারণে।
উপজেলা মৎস অফিস ও মাছ চাষী সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে পুকুর দিঘীতে মাছ চাষ করা হয়। কার্প ও মিশ্র প্রজাতির ২৫ হাজার মেট্রিক টন মাছ বিক্রি করে গত বছর আয় হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। স্থানীয় মৎস চাষীরা জানান- রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউস, সিলভার, ব্রিগেড, ব্লাডকার্প জাতের মাছ চাষ করা হয়। এছাড়া একই সঙ্গে প্রতিটি পুকুরে নিবিড় ও আধা নিবিড় দুই পদ্ধতিতে রুই, শিং, পাবদা, টেংরা সহ বেশ কয়েক প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়।
এর মধ্যে মিশ্র প্রজাতির সুস্বাসু পাবদা, শিং, পাঙ্গাস মাছ ভারতে রপ্তানী করা হয়। ভবানীগঞ্জের মৎস চাষী রহিদুল ও জব্বার জানান, তারা পোনা মাছ চাষ করেন না। নূন্যতম আধা কেজির ওপরে কার্প জাতীয় মাছ ছাড়া হয়। এসব মাছ ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে নূন্যতম তিন কেজি থেকে আট কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এসব মাছ তারা ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা সহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করে থাকেন। উপজেলা মৎস কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, ছোট বড় খাল বিল দিঘী পুকুর মিলে ১০ হাজার হেক্টর জলাসয়ে মাছ চাষ করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এখানে ১৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষমাত্র ধরা হলেও প্রকৃত উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার মেট্রিক টনের উপরে। তিনি আরো বলেন এখানে স্থানীয় চাহিদা ৭ থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন। অবশিষ্ট মাছ বিভিন্ন জেলা সহ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও রপ্তানী হয়। তার মতে, বাগমারার মাটি, পানি সহ সার্বিক আবহাওয়া মাছ চাষের জন্য বেশ উপযোগি।
তাই এখানে পরিকল্পনামাফিক মাছ চাষ করতে আরো বেশি উৎপাদন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। স্থানীয় মৎস চাষী ও ব্যবসায়ীদের মতে, বাগমারায় মৎস চাষের বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। এই সুযোগকে দীর্ঘস্থায়ী টিকসই করতে প্রয়োজন সরকারি পুষ্ঠপোষকতা। এখানে আধুনিক মানের মৎস আরোহন, সংরক্ষন ও বিপনন কেন্দ্র নেই। তাদের মতে এসব সুবিধা ছাড়াও মৎস খাতে জড়িতদের ব্যাংক ঋন ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা থাকলে মৎস খাত আরো উন্নত হবে।