বাগমারায় ভাসুর-দেবরের নির্যাতনে এতিম সন্তান নিয়ে বিপাকে স্বামীহারা তরুণী - দৈনিক বাগমারা
বুধবার , ৯ নভেম্বর ২০২২ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. চাকরি
  7. জাতীয়
  8. জীবনযাপন
  9. তথ্য ও প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. বাগমারা উপজেলা
  12. বিনোদন
  13. রাজনীতি
  14. শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  15. সম্পাদকীয়

বাগমারায় ভাসুর-দেবরের নির্যাতনে এতিম সন্তান নিয়ে বিপাকে স্বামীহারা তরুণী

প্রতিবেদক
Dainik Bagmara
নভেম্বর ৯, ২০২২ ৩:৫৯ অপরাহ্ণ

বিজ্ঞাপন

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারাঃ

থানা পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম্য মাতব্বর কোথাও বিচার পাননি এক অসহায় নারী । স্বামীর মৃত্যুর পর শ্বাশুড়ী, দেবর-ভাসুর ও তাদের স্ত্রীদের কাছে দিনের পর দিন উৎপীড়ন শারিরীক নির্যাতন ও মানসিক যন্ত্রনায় নাজেহাল হয়ে অবশেষে এক শিশু সন্তানকে নিয়ে স্বামী গৃহ ছাড়তে বাধ্য হলেন সাথী বিবি (৩০)। ২০২০ সালে স্বামীর আকর্ষিক মৃত্যুর পর সাথীর উপর নেমে আসে মধ্যযুগীয় নির্যাতন।

ওই সময় সে স্বামী গৃহ না ছাড়ায় সাথী ও তার পুত্র সন্তানকে খাবারে বিষ মিশিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এর পর সাথী প্রানভয়ে পালিয়ে আশ্রয় নেন অসহায় পিতার গৃহে। এর পর ন্যায় বিচারের জন্য সাথী আদালতের শরনাপন্ন হলে তাকে দেওয়া হয় নানান অপবাদ অবশেষে প্রাননাশ ও গুমকরার হুমকি।

আদালতের অভিযোগ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে উপজেলার বাগমারা থানাধীন বাগমারা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর পুত্র মাহাবুর রহমান(৩৪) এর সাথে একই ইউনিয়নের মাদারীগঞ্জ গ্রামের আবুল হোসেনের কন্যা সাথী বেগমের বিয়ে হয়। এর পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। রোকনুজ্জামান নামে ওই সন্তানের বয়স এখন দশ। সাথীর স্বামী মাহাবুর পেশায় একজন কসমেটিক্্র ব্যবসায়ী। বাগমারা থানার মোড়ে ছিল তার দোকান।

এছাড়া মাহাবুর ছিল একজন ভালো ফুটবলার। এলাকার সর্বসহলে ছিল সুদর্শন মাহাবুরের পরিচিতি। নিয়তির খেলা। ২০২০ সালে হটাৎ করে হার্ড এ্যাটাকে মারা যান মাহাবুর। এবার তিমিশার অন্ধকার নেমে আসে সাথীর জীবনে। তার উপর শুরু হয় মধ্যযুগীয় শারিরীক ও মাসসিক নির্যাতন। যে স্বামীর ইনকামে চলতে গোটা পরিবার।

আজ সেই স্বামীর মৃত্যুতে সাথী যেন আজ ঘৃণার পাত্রে পরিনত হয়েছে। তাকে আর এক মুহূর্ত সহ্য করতে পারছে না ভাসুর, দেবর ও সৎ শ্বাশুড়ী। ভাসুর মাসুদ রানা(৪৫) দেবর জাহিদ হাসান(২৪) ও সৎ শ্বাশুড়ী মিলে সাথীকে গৃহছাড়া করতে শুরু করে গভীর ষড়যন্ত্র ও নির্যাতন। তারা সাথীকে এক প্রকার জিম্মী করে তার কাছে থাকা ব্যবসার মুলধন, স্বামীর ক্রয়কৃত জমির দলিলপত্র ও স্বর্ণলংকার সহ সবকিছুই ছিনিয়ে নেয় একে একে ।

সাথীর পিতা আবুল কাসেম জানান, আমার মেয়েকে তারা দিনের পর দিন শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়েছে। সামান্য এক কাপড়ে মেয়ে আমার বাড়িতে এসে একমাস অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী ছিল। তাকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলেছি। তারপর বিচারের জন্য অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোথাও বিচার পায়নি। এক মাত্র নাতিকে হাফেজিতে ভর্তি করে দিয়েছি। সে দশ পারা কোরআনের হাফেজ হয়েছে। তারা আমার মেয়ে ও আমার এতিম হাফেজ নাতিকে নির্যাতন করেছে। তিনি আরো জানান, এভাবে নির্যাতন করে সাথীকে দমাতে না পেরে এবার সাথী ও তার নাবালক পুত্রকে খাবার দাবার বন্ধ করে দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন।

অবশেষে সাথীকে খাবারে বিষ মিশিয়ে মেরে ফেলা ও গুমকরার হুমকি দেওয়ায় সাথী প্রাণভয়ে পালিয়ে স্বামী মৃৃত্যুর পরের বছর পিতার গৃহে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এবারে সাথী বিচারের জন্য থানা পুলিশ সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোথাও বিচার না পেয়ে অবশেষে আদালতের শরনাপন্ন হন। ওই বছরই সাথী রাজশাহীর নারী শিশু আদালতে ভাসুর মাসুদ রানা ও দেবর জাহিদ হাসানকে বিবাদি করে একটি মামলা দায়ের করেন এবং নিরাপত্তার জন্য থানায় একটি জিডিও করেন। এভাবে মামলা করায় সাথীকে দেওয়া হয় নানান অপবাদ ও প্রাননাশের হুমকি।

দেবর ভাসুর ও তাদের ভাড়াটে লোকজনের কাছে একের পর এক হুমকি ও মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখানোয় বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপনে থাকা শুরু করেন । এভাবে হয়রানীর শিকার হয়ে অর্থকষ্ট সহ নানান ডিড়ম্বনায় রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েন সাথী । তিনি আবেগআপ্লুত ও কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, মামলা করে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছি।

প্রথমে মামলা করতে বাগমারা থানায় গেলে দেবর -ভাসুরের প্রভাব প্রতিপত্তি ও টাকার কারণে পুলিশ আমাকে ফিরিয়ে দেয়। পরে আদালতে মামলা করলে সেটিরও তদন্ত আসে থানায়। এবারও পুলিশ আমাকে চরম হতাশ করে। তারা আমার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রতিবেদন দেয়। পরে আমি আদালতে নারাজি দাখিল করে আমার হাফেজ পুত্রকে নিয়ে মহামান্য আদালতে উপস্থিত হলে আদালত আমাদের উপর দয়াপরবশ হয়ে মামলাটি পূনঃতদন্তের জন্য উপজেলা সমাজ সেবা দপ্তরে পাঠায়।

এ বিষয়ে বাগমারার সমাজ সেবা কর্মকর্তা(অতিরিক্ত দায়িত্ব) রাকিবুল ইউসুফ রাজশাহীর নারী শিশু আদালতের এ সংক্রান্ত নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য উভয় পক্ষকে নোটিশ জারির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রবিউল ইসলাম জানান, ঘটনাটি বেশ পুরানো। ওই সময় পুলিশের প্রতিবেদনে কোন অনিয়ম হয়েছে কিনা তা জানা নেই। তবে কর্তমানে ওই বিধাব নারীর নিরাপত্তা জনিত কোন সমস্যা হলে তা আমাদের জানালে ব্যবস্থা করা হবে।

Facebook Comments Box

প্রতিমুহুর্ত্বের খবর দ্রুত পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত

সর্বশেষ - বাগমারা উপজেলা

আপনার জন্য নির্বাচিত

বাগমারায় ইত্তেফাকের ৭০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

বাগমারায় ভবানীগঞ্জ ফিলিং স্টেশনে প্রশাসনের অভিযান, তেল পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ

বাগমারায় কন্যা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

বাগমারায় বোরো মৌসুমে শ্রমিক সংকট, বেড়েছে মজুরী

বাগমারায় নরদাশ ইউনিয়নে গ্রামীণ সড়ক সিসি করণের উদ্বোধন

বাগমারায় ফসলি জমিতে ফের পুকুর খননের মহোৎসব

বাগমারায় এইচবিবি কাজের লটারী অনুষ্ঠিত

বাগমারায় ২২০ ফুট নৌকার মঞ্চে হবে জেলা কৃষক লীগের সম্মেলন

বাগমারায় প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করলেন এমপি এনামুল হক

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই মানুষ নানান রকম ভাতা পাচ্ছেঃ এনামুল হক এমপি

x
error: Content is protected !!