বাগমারায় তরুণকে অপহরণের ঘটনায় নতুন মোড়, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য - দৈনিক বাগমারা
রবিবার , ১১ জুন ২০২৩ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. চাকরি
  7. জাতীয়
  8. জীবনযাপন
  9. তথ্য ও প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. বাগমারা উপজেলা
  12. বিনোদন
  13. রাজনীতি
  14. শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  15. সম্পাদকীয়

বাগমারায় তরুণকে অপহরণের ঘটনায় নতুন মোড়, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রতিবেদক
Dainik Bagmara
জুন ১১, ২০২৩ ১:৪৬ অপরাহ্ণ
মাস্টার এজেন্ট হৃদয়

বিজ্ঞাপন

বাগমারায় টাকার জন্য তরুণকে অপহরণের ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দৈনিক বাগমারার নিজস্ব অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অপহরণের শিকার তরুণ নিজেই অনলাইন জুয়ার একজন মাস্টার এজেন্ট। অভিযুক্ত অপহরণকারীগন তার হয়ে বাগমারায় জুয়া পরিচালনা করতো বলে জানা গেছে।

অপরদিকে অপহরণ মামলার বাদি ও ভুক্তভোগী হৃদয়ের বাবা জহুরুল ইসলাম মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন বলে দৈনিক বাগমারাকে জানান। এর প্রেক্ষিতে আজ রবিবার বিজ্ঞ আদালত সব আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে এগারোটায় মোহাইমিনুল আজিজ ওরফে হৃদয় (২৩) নামের এক তরুণকে ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকার কসবা মোড় থেকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে ভবানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডের অফিস ঘরে আটকে রাখে কয়েকজন তরুণ। এসময় হৃদয়ের বিকাশে থাকা ১৫ হাজার টাকা জোর পূর্বক সেন্ড মানি করে মিঠু নামের এক ব্যক্তির নাম্বারে নিয়ে নেয়। এবং আরো টাকার জন্য তাকে চাপ দিতে থাকে।

আরো পড়ুন- বাগমারায় টাকার জন্য তরুণকে অপহরণ, নেপথ্যে অনলাইন জুয়া

পরবর্তীতে হৃদয়ের বন্ধুদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাগমারা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। এসময় অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মাসুদ, নাহিদ, সিজার ও মিঠু নামের চার যুবককে আটক করে পুলিশ। পরদিন শনিবার দুপুরে হৃদয়ের বাবার করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয় তাদের।

শনিবার বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমের খবরে স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে লেখা হয়, অপহরণকারী যুবকদের সাথে হৃদয়ের অনলাইন জুয়ার টাকা নিয়ে বিরোধ ছিল। পাওনা টাকার জন্য হৃদয়কে তুলে নিয়ে এসেছিল তারা।

বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অনুসন্ধানে নামে দৈনিক বাগমারা। সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে, কোথাও বা অনলাইন জুয়ারীর ছদ্মবেশে কথা বলা হয় জুয়ার সাথে জড়িত বিভিন্ন লোকজনের সাথে। এর মাধ্যমে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

জানা গেছে, হৃদয়ের পৈত্রিক বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাঘা পৌর এলাকায়। তবে তার মায়ের চাকরি সূত্রে পরিবার থাকে পুঠিয়ায়। হৃদয় রাজশাহী শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থেকে নিয়ন্ত্রণ করে বাগমারা ও পুঠিয়ার অনলাইন জুয়ার জগৎ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, একসময় বাগমারায় হৃদয়ের হয়ে জুয়ার টাকা লেনদেন করতো গ্রেফতার হওয়া মাসুদ ও সিজার। টাকা নিয়ে বিরোধের জন্যই হৃদয়কে উঠিয়ে নিয়ে যায় তারা।

তবে মামলা প্রত্যাহার ও আসামিদের জামিনের জন্য বাগমারা উপজেলা যুবলীগের একজন নেতার দৌড়ঝাঁপ ও উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা স্থানীয়দের মধ্যে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে ঐ যুবলীগ নেতার পাওনা টাকা আদায় করতেই নাকি এই অপহরণের নাটক সাজানো হয়। কিন্তু হৃদয়ের বন্ধুরা পুলিশ কে খবর দিলে বিপত্তি দেখা দেয়।

রবিবার দুপুরে হৃদয়ের বাবা জহুরুল ইসলাম দৈনিক বাগমারাকে জানান, আমি মামলা প্রত্যাহার করেছি। মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাকে কোন ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন।তবে গত শনিবার ভুক্তভোগী হৃদয় এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, বাগমারা উপজেলা যুবলীগের একজন নেতা মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছেন।

মামলা প্রত্যাহার ও আসামিদের জামিনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নুর আলম জানান, তিনি আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে চালান করেছেন। মামলা প্রত্যাহার বিষয়টি তার অবগত নয়। হৃদয়ের জুয়ার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে কিছু জানেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।

এবিষয়ে হৃদয়ের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য যে বাগমারার বিভিন্ন এলাকায় মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইন জুয়া। ইতিপূর্বে এই বিষয়টি নিয়ে দৈনিক বাগমারায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকার ব্র্যাক মোড়, গোডাউন মোড় সংলগ্ন ট্রাক শ্রমিক অফিস এলাকা, কলেজ মোড়, উত্তর একডালা পাহাড়পুর, ভবানীগঞ্জ বাস স্টান্ড এলাকা, হাট গাঙ্গোপাড়া, মচমইল, তাহেরপুর, শিকদারী বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় দলবেঁধে বসে প্রকাশ্যে মোবাইলে জুয়া খেলতে দেখা যায়। এদের অধিকাংশই কিশোর তরুণ ও যুবক।

আমাদের সোর্সের তথ্য অনুযায়ী রাজশাহী মহানগরীতে বসে মাহমুদুল হাসান ওরফে বাবু (ছদ্মনাম), হৃদয় ও শুভ নামের তিন মাস্টার এজেন্ট নিয়ন্ত্রণ করছে পুঠিয়া, দুর্গাপুর ও বাগমারার অনলাইন জুয়া। এরমধ্যে বাবু ও শুভর পৈত্রিক বাড়ি পুঠিয়া উপজেলায় বলে জানা গেছে। তাদের হয়ে বাগমারার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে কমপক্ষে ১৫ জন সাব এজেন্ট বা সাব ডিলার। এনড্রয়েড মোবাইলে মোবক্যাশ নামের একটি বিশেষ এপসের মাধ্যমে গ্রাহকের গেম আইডিতে ডিপোজিট করে দিয়ে এই চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে এই মহামারী নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এবং ভয়াবহ সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টি করবে বলে সচেতন মহলের ধারণা।

এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে তরুণ সমাজ আসক্ত হয়ে পড়েছে অনলাইন জুয়ায়। তদন্ত শুরু করা হয়েছে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

Facebook Comments Box

প্রতিমুহুর্ত্বের খবর দ্রুত পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত

সর্বশেষ - বাগমারা উপজেলা

x
error: Content is protected !!