বিজ্ঞাপন
বাগমারা প্রতিনিধি
নির্বাচনী আচরণবিধির কোন তোয়াক্কা করছেন না রাজশাহীর বাগমারায় নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। সেই সাথে তার সাথে থাকা লোকজনও একই ভূমিকা পালন করছেন।
যা এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত ২৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরই তেলে বেগুনে জ¦লে উঠেছে আবুল কালাম আজাদ। শুক্রবার বিকেলে তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে কিছু নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা করেন তিনি। সেই মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। উক্ত সভার বক্তব্য বেশ কয়েকটি ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করা হয়। সেখানে দেখা যায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থী তিন বারের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হককে হুমকী প্রদান করতে। ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করবেন।
এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন এমন প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে অন্য প্রার্থীদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে না করলেও গুরুত্বের সাথে দেখছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হককে। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচন করবেন। এরই মধ্যে উপজেলার সাধারণ ভোটার তার পক্ষ নেয়ায় শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন। ভোটে যেহেতু সাধারণ মানুষ অংশ গ্রহণ বেশি তাই তারাই স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের শক্তি। সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ বারের মতো নির্বাচন করছেন। গত ১৫ বছরে তিনি অন্ধকার ও রক্তাক্ত বাগমারাকে শান্তি আর উন্নয়নের জনপদে পরিণত করেছেন। সে কারণে নৌকার প্রার্থীর চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছেন তিনি।
সেদিক থেকে পিছিয়ে পড়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সহ তার কর্মী সমর্থকদের হুমকী প্রদান করছেন। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ লাইভ চলাকালে প্রকাশ্যে বলে উঠেন ১৮ ডিসেম্বরের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হককে বাগমারায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন যেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেশবাসীকে উপহার দিতে চান সেখানে এমন ভীতিকর মন্তব্য মোটেও সেই কথা সাথে যায় না। নিজের দাম্ভিকতা আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এই বক্তব্য বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটার। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সেই বক্তব্য এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে তার লোকজন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালান। জনমনে আতংক সৃষ্টি করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। এছাড়াও প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার আগেই বিভিন্ন স্থানে তিনি নির্বাচনী প্রচারণার বিলবোর্ড স্থাপন করেছিলেন।
নৌকার প্রার্থীর এমন বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল বলেন, নির্বাচন কমিশন বহিঃবিশে^র কাছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণ যোগ্য করতে কাজ করে যাচ্ছেন। সে জায়গায় নৌকার প্রার্থীর এমন ভীতিকর বক্তব্য এবং হুমকী স্বচ্ছ নির্বাচনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। আমি নির্বাচন কমিশন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকের নিকট আদেবন করছি তারা যেন বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
এ ব্যাপারে তিন বারের এমপি এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নির্বাচনে যে কেউ প্রার্থী হতে পারে। কে মনোনয়ন পেল আর কে পেল না সেটা মূখ্য বিষয় না। নির্বাচনে অংশ গ্রহণের অধিকার সবার রয়েছে। নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সে ক্ষেত্রে নৌকা পেলেই যে জিতে গেল এমনটা ভাবার অবকাশ নেই। নির্বাচনে এখনো প্রতীক বরাদ্দই হয়নি। বাগমারায় আমাকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না এমন হুমকী দিয়ে লাভ হবে না। হুমকীমূলক বক্তব্যের ঘটনায় আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এমন বক্তব্য দিয়ে সে কি বুঝাতে চাই সাধারণ জনগণ তা বুঝে গেছে। কোন হুমকীতে আমি ভয় পায়না। সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি। সাধারণ জনগণই এমন হুমকীমূলক বক্তব্যের সঠিক জবাব দিবেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন বক্তব্যের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ, এফ, এম, আবু সুফিয়ান বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিমুহুর্ত্বের খবর দ্রুত পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত