বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বগমারায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় সোহাগ (২৬) নামে এক যুবককে নির্মম ভাবে খুন করা হয়। নিহত সোহাগ যশোরের মনিরামপুর এলাকার শরিফুল মিস্ত্রীর ছেলে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের মর্মান্তিক হামলায় সোহাগকে জীবন দিতে হয়। ওই ঘটনায় সোহাগের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম সাগর বাদী (গত ৩ ফেব্রুয়ারি) বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পর থেকে হত্যা কান্ডের সাথে জড়িতরা এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স সহ আত্রাই উপজেলার দিঘা ব্রীজ বাজার এলাকা থেকে রহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে থানায় নেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত রহিদুল ইসলাম মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সগর উদ্দীনের ছেলে।
উল্লেখ্য, গত শক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে মনাহার ইসলাম তাদের জমিতে থাকা সরিষা তুলতে বিলে যায়। এ সময় একই গ্রামের বেশ কয়েকজন সংঘবদ্ধ ভাবে হাজির হয় মনাহার ইসলামের সরিষার ওই জমিতে। সেখানে তারা মনাহারকে বলতে থাকে তুকে বিলের জমিতে আসতে নিষেধ করেছি তারপরও কেন সরিষা তুলতে এসেছিস। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা বাধে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মনাহারকে সরিষার জমিতেই সন্ত্রাসী কায়দায় বেধড়ক মারপিট করে। সন্ত্রাসী হামলায় আহত মনাহারকে উদ্ধার করে পাশের আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বন্ধুর উপরে সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে আহত মনাহার ইসলামের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয় সোহাগ সহ তার বন্ধুরা।
আহত মনাহারের বাসায় পৌঁছার আগেই সন্ত্রাসী হামলায় শিকার হয় সোহাগ সহ তার বন্ধুরা। ওই সকল সন্ত্রাসীর হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সোহাগ। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে নিহত সোহাগের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে লাশের ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এ ঘটনায় তৎক্ষণাত কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও অভিযান অব্যাহত রাখে পুলিশ।
জানা গেছে, ঢাকার মালিবাগে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতে গিয়ে বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনিসার রহমানের ছেলে মনাহার ইসলামের সাথে পরিচয় হয় সোহাগের। সমবয়সী হওয়ায় সেই পরিচয় ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে রুপ নেয়। এসময় দুই জনেই ওই কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দেয়। চাকরি ছাড়লেও বন্ধ হয়নি তাদের যোগাযোগ। প্রায়ই দুজনের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতো। সেই যোগাযোগ থেকে আহত বন্ধুকে দেখতে আসছিল সোহাগ সহ তার বন্ধুরা।
এ ব্যাপারে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম বলেন, সোহাগ হত্যা মামলায় রহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আত্রাই উপজেলার একটি দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।