বিজ্ঞাপন
বাগমারা প্রতিনিধি
আগামী ২১ মে রাজশাহীর বাগমারায় অনুষ্ঠিত হবে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনো প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়নি। প্রতীক বরাদ্দ দেয়া না হলেও নিজের পছন্দের প্রতীকে প্রকাশ্যে ভোট চাইলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু।
রবিবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক কর্মীসভা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম সান্টু। তাঁর সেই বক্তব্য জাকিরুল ইসলাম সান্টুর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লাইভ সম্প্রচার করা হয়। তবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ হওয়ায় সেই বক্তব্য ওই আইডি থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের আগেই ঘোড়া প্রতীকের কথা বলে ভোট চাওয়া নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণের সামিল।
তবে এরই মধ্যে জাকিরুল ইসলাম সান্টুর ঘোড়া প্রতীকে ভোট চাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তাকে বলতে শোনা গেছে, আগামী ২১ মে আমার ঘোড়া মার্কা প্রতীকে এবং কহিনুর আপার যে প্রতীক হয় সে প্রতীকে আপনারা ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করলে আপনাদের খাদেম হিসেবে, আপনাদের কর্মী হিসেবে আপনাদের হুকুম তামিল করবো। আপনাদের কথা বার্তা শুনে চলাফেরা করবো এই বক্তব্য পেশ করে আমার বলা বক্তব্যের মাধ্যমে ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা প্রার্থনা করে আমি বক্তব্য শেষ করছি।
সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এমপি আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে গঠিত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থী ঘোষণা করেননি। তবে বাগমারায় সেটা মানা হয়নি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রয়োজনতন্ত্রর ভিত্তিতে প্রার্থী ঘোষণা করেন এমপি আবুল কালাম আজাদ।
গত ১৫ এপ্রিল উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় এমপি চেয়ারম্যান পদে জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তবে ওই পদে নাছিমা বেগম থাকলেও দলীয় ভাবে তাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। এ যেন মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হওয়ার মতো ঘটনা। সবশেষ রবিবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থীই চূড়ান্ত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচনে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী আঃ রাজ্জাক সরকার বলেন, আমিও চেয়ারম্যান প্রার্থী। আগামী ২ এপ্রিল সরকারি ভাবে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এর আগে নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙ্গে কোন প্রার্থী আবেদনকৃত প্রতীক ব্যবহার করে প্রচারণা চালাতে পারে না। চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম সান্টুর বক্তব্য ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লাইভ প্রচার করা হয়েছে। তাই নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অপরাধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
প্রকাশিত বক্তব্যের বিষয়ে জাকিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘোড়ায় ভোট চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি সরাসরি ঘোড়ায় ভোট চাইনি। আমি বলেছি আমরা চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী রয়েছি। যেহেতু কেউ ঘোড়া প্রতীক চাননি তাই আমি এবারও ঘোড়া প্রতীক চেয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে কোন প্রার্থী তাদের পছন্দের প্রতীকে ভোট চাইতে পারবে না। সরকারি ভাবে প্রতীক ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত কোন ভাবেই প্রার্থী এটা করতে পারে না। এর মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি ভাবে যেহেতু এখনো প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক দেয়া হয়নি তাই প্রতীক উল্লেখ করে কোন প্রার্থী ভোট চাইতে পারে না। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।
প্রতিমুহুর্ত্বের খবর দ্রুত পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত