শিরোনাম :
ডিএম জিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বাগমারা উপজেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ বাগমারায় এনসিপির কমিটি গঠনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নেতাদের পদত্যাগের হিড়িক বাগমারায় ফসলি জমিতে চেয়ারম্যানের অবৈধ পুকুর খনন, প্রশাসনের অভিযান মোহনপুরে মৎস্য চাষি ও সেবা প্রদানকারীদের মেন্টরিং ও সম্মাননা প্রদান বাগমারায় গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরের আত্মহত্যা বাগমারায় নারীর বিরুদ্ধে যুবকের পুরুষাঙ্গ কাটার অভিযোগ গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বকুল খরাদী গ্রেফতার বাগমারায় ডিস লাইনের বৈদ্যুতিক শকে নারীর মৃত্যু বাগমারায় গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও এনজিও টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন বাগমারায় টেলিগ্রাম অ্যাপসে টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার

ইউএনওর সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে পেটালেন বিএনপি নেতারা

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
  • ১০১

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এর সামনেই উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ ৪ নেতাকে বেধড়ক মারধর করলেন বিএনপি নেতারা। এসময় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করায় ইউএনওকেও মারধর করতে গেলে জামায়াত নেতারা ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বাঁধা দেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।

সোমবার (৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ৪ জামায়াত নেতা হলেন- উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস, সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জামায়াতের এই ৪ নেতা ইউএনও’র অফিসে যান কোনো একটি কাজে; কিন্তু ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় জামায়াত নেতারা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী বালু উত্তোলন বন্ধ করেছেন কেন জানতে ইউএনও’র কাছে যান।

সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন- এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনও’র কক্ষ থেকে বের হয়েই আরও কয়েকজনকে ডেকে আনেন। এরপরই বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খা, মানিক খা, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন বিএনপির ক্যাডার ইউএনওর কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের কিল-ঘুসি, লাথিসহ বেধড়ক মারধর করেন। এতে জামায়াত নেতারা গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সুজানগর বাজারে কিছুদিন আগেও দিনেদুপুরে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করেছে এসব সন্ত্রাসীরা। উপজেলাজুড়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে আসছে। সকলকে জিম্মি করে রাখছে এই চক্রটি। ইউএনওকে এর আগেও কয়েকবার করে হুমকি দিয়ে আসছে।

এদিকে জামায়াত নেতাদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় উপজেলাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর জামায়াতের উপজেলা আমির কেএম হেসাব উদ্দিনসহ কয়েকশ নেতাকর্মী ইউএনও অফিসে ছুটে আসেন এবং ঘটনার প্রতিবাদ জানান। এ সময় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও’র সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দরবার চলে। পরে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ ও যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যারা আজকের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এ সকল সন্ত্রাসী আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা বলেছি যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে। এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আলোচনা করা হবে।

সুজানগর উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক কেএম হেসাব উদ্দিন বলেন, সুজানগরে বালু উত্তোলন বন্ধ করায় বিএনপির এসব ক্যাডাররা ইউএনওকে মারধর ও তুলে আনার জন্য গেছিল। এসময় জামায়াত নেতারা বাঁধা দিলে আমাদের ৪ জনকে তারা বেধড়ক মারধর করেছে। ইউএনওকেও কয়েকদফা মারধর করতে গেলে ঠেকিয়ে দেওয়া হয়। পরে মারতে না পেরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছে ও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের সরকারি অফিসেও নিরাপত্তা নাই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগস্টের পর এসব নেতারা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির গডফাদার হয়েছে। চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন, মাদক কারবারি, চুরি- ডাকাতি, অপহরণ ও ছিনতাই থেকে শুরু করে সকল অপকর্ম করে বেড়ালেও এদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করব।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান অভিযুক্ত মজিবুর রহমান খান ও মানিক খানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সুজানগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মজিবুর রহমান জানান, ঘটনাটি অতি দুঃখজনক। আহতরা এখনও মামলা করতে আসেননি। তারা এলেই মামলা নেওয়া হবে। যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। যেহেতু আমার কক্ষে মারধরের ঘটনা ঘটেছে ও সরকারি কাজে বাঁধা দানের ঘটনা ঘটেছে কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি
২০২৫ © দৈনিক বাগমারা.কম.বিডি
error: Content is protected !!