বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির পক্ষে শান্তিপূর্ণ প্রচারণা চালানোর সময় বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর দেড়টার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ক্যাডার বাহিনী হামলা চালিয়েছে। দুপুরে দামনাশ বাজারে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের পক্ষে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শনে যান এনাগ্রুপের কর্মকর্তাগণ। সেখানে নৌকা প্রার্থীর ক্যাডার বাহিনী ওই গাড়িতে হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাংচুর করে এবং চাবি কেড়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
সেই সাথে তাহেরপুর বাজারে কাঁচি প্রতীক সম্বলিত একটি শান্তিপূর্ণ বাইসাইকেল র্যালিতে হামলা ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাইসাইকেল ভেঙ্গে ফেলে তারা। পাশাপাশি র্যালিতে থাকা ছোট ছোট শিশুদের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে পরিহিত টি-শার্ট টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়। এছাড়া ধারালো চাকু দিয়ে একজনের গলায় আঘাত করা হয়। এ সময় অনেক শিশুকে মারপিট করে নৌকার ক্যাডার বাহিনী।
অপরদিকে যাত্রাগাছী বাজারে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কর্মী সমর্থকের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে নৌকার ক্যাডার বাহিনী। ওই হামলায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম, আবুল কাশেম ও জিল্লুর রহমান। আশরাফুলের শারীরিক অবস্থা গুরুতর। এছাড়াও ভবানীগঞ্জ পৌরসভার কর্নিপাড়া মহল্লায় আবু বাক্কার সিদ্দিক নামের আরেক সমর্থকের উপরে হামলা চালায় তারা। এ সময় তারা আবু বাক্কার সিদ্দিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে। তাদের হামলায় চোখের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে আবু বাক্কার সিদ্দিকের।
অন্যদিকে গনিপুর ইউনিয়নের আচিনঘাটে কাঁচি প্রতীকের কর্মীদের উপর হামলা করেন নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বাহিনী। তারা কাঁচি প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। পোস্টার যেন না ছেঁড়া হয় যে জন্য নিষেধ করার কারনে হামলার ঘটনা ঘটান। সেই সাথে মারপিট করে এবং দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। পাশাপাশি যতো পোস্টার ব্যানার ছিল সব কিছু নিয়ে চলে গেছে ওই বাহিনীর সদস্যরা।
শুধু হামলায় না বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে নৌকার ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কাঁচি প্রতীকের ব্যানার পোস্টার টাংগাতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন নেতৃবৃন্দ। শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশকে ক্রমের উতপ্ত করে তুলছেন নৌকার প্রার্থী সহ তার অনুসারীরা। নৌকার বাইরে কথা বললেই চালানো হচ্ছে হামলা। সাধারণ ভোটাররা নৌকার পক্ষে সমর্থন না করায় হামলা চালিয়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাগমারায় নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে প্রার্থী সহ তার অনুসারীরা। সমগ্র বাগমারা জুড়ে তারা তান্ডব চালাচ্ছেন। বাগমারাকে আবারও অশান্ত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নৌকার প্রার্থী সহ কর্মীরা। শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার পাশাপাশি মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে তারা। শান্তিপূর্ণ বাগমারার মানুষ আর সন্ত্রাস চায় না। আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালিয়ে ভোটে জয়লাভের আশা করে লাভ নেই। বিভিন্ন স্থানে অতর্কিত হামলার ঘটনায় আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। উপজেলা জুড়ে আইন শৃংখলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।