
স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা:
বাগমারায় এক লম্পট কলেজ শিক্ষকের ক্রমাগত যৌনহয়রানীর শিকার হয়ে এক কলেজ ছাত্রী হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।
হারপিক পানের পর ছাত্রীটির আবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানে দুইদফা তার পাকস্থলী ওয়াস এবং চিকিৎসার মাধ্যমে ছাত্রীটিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে ডাক্তাররা। ছাত্রীটির অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত না বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এই ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর বাবা গতকাল সোমবার বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শ্রীপুর রামনগর ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে একই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন কলেজে ভর্তির পর থেকেই যৌরহয়রানি শুরু করেন। তকে নানা ভাবে কুপ্রস্তাব দেন ও তার কথা মত স্থানে দেখা করতে বলেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের জানালে তারা বিষয়টি তাৎক্ষনিক কলেজ অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে জানালেও তারা বিষয়টি আমলে নেননি বলে অভিযোগ করেন ছাত্রীর বাবা।
এছাড়া একই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের আরো এক ছাত্রী শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে প্রায় একই অভিযোগ তুলে ধরেন। ওই ছাত্রীটি বলেন, আনোয়ার স্যার প্রায় তাকে উৎত্যক্ত করেন। ক্লাসের পরে দেখা করতে বলেন, মোবাইলে কথা বলতে চান। শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে কলেজের অন্যান্য ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা এসবের বিচারও দাবী করেছেন।
এদিকে শিক্ষক আনোয়ারের যৌনহয়রানীর শিকার বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রী হাটগাঙ্গোপাড়ায় একটি কোচিং সেন্টারে নিয়মিত কোচিং করতে যায়। সম্প্রতি ওই ছাত্রী হাটগাঙ্গোপাড়ায় কোচিং করতে গেলে সেখানে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ছাত্রীটির পথ আগলে তাকে জোরজবরদস্তী শুরু করে। এক পর্যায়ে শিক্ষক আনোয়ার ছাত্রীটির নামে আজেবাজে মন্তব্য ও অনৈতিক কাজে জড়িত বলে গালাগাল করতে থাকে। এভাবে সে তার ভ্যানেটি ব্যাগ জোর করে খুলে দেখার চেষ্টা করে। এ সময় আশেপাশের লোকজন জড় হলে ছাত্রীটি লোকলজ্জার কারণে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সেখান থেকে কোনরকমে বাড়িতে গিয়ে ওই দিন রাতেই সে কাউকে কিছু না বলে শিক্ষক আনোয়ারের কুপ্রস্তাব সহ তার ওপর জোরজবরস্তী করার বিষয়টি একটি চিঠিতি লিখে হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে ছাত্রীটির জ্বালা যন্ত্রনা ও গোঙানির শব্দ আঁচ করতে পেরে তার পিতা ও পরিবারের সদস্যরা ওই রাতেই তাকে বাগমারা মেডিকেলে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এসব বিষয়ে মতামত জানতে চেয়ে শিক্ষক আনোয়ারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, ছাত্রীটি হাটগাঙ্গোপাড়া পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন একটি বাড়িতে প্রায় যাতায়াত করে। ওই বাড়িটি বিভিন্ন অনৈতিক কাজের আখড়া হওয়ায় সেখানে যেতে তাকে(ছাত্রীকে) নিষেধ করা হয়েছে । এর বেশি তেমন কিছু বলা হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,এফ,এম আবু সুফিয়ান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি অচিরেই তদন্ত করা হবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রতিমুহুর্ত্বের খবর দ্রুত পেতে পেজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন