বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারায় মন্ত্রীর নিরাপত্তা দিতে আসা পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত বেশ কয়েক জনের নামে এই মামলা করা হয়।
পুলিশের পিকআপে হামলার ঘটনা প্রথমে অস্বীকার করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাও চলে। পুলিশের পিকআপে রাজশাহী-৪(বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারীদের হামলার ঘটনাটি পিকআপের ছবি সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। ঘটনার একদিন পর ওই ঘটনার সাথে জড়িদের বিরুদ্ধে বাগমারা থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। যার মামলা নং ২৮। মামলা হলেও অদৃশ্য কারনে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনার পর থেকে সাধারণ জনমনে আতংক বিরাজ করছে। যেখানে পুলিশ নিরাপত্তা দিতে এসে গাড়ি সহ হামলার শিকার হয় সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়।
গত ২০ মার্চ বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভায় বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য সফরে এসেছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। মন্ত্রীর সেই সফরে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাহেরপুর বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তাহেরপুর বাজারে মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি পৌঁছার আগেই বাগমারা থানা সহ কয়েকটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এবং ফাঁড়ি থেকে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ওই দিন বেলা ১১ টার দিকে ঝিকরা পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে তাহেরপুর হরিতলায় আসে পুলিশের একটি পিকআপ। যেটা পুলিশকে উপহার দিয়েছিলেন বাগমারার সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। ওই পিকআপের দুই পাশে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের নাম সংবলিত স্টিকার লাগানো ছিল। মন্ত্রীর নিরাপত্তা প্রদানে আসা সেই পিকআপ থেকে পুলিশ সদস্যরা নামার আগেই এমপি আবুল কালাম আজাদের শতাধিক অনুসারী ওই গাড়িতে হামলা করে। ওই সময় তারা গাড়ির চালককে বলতে থাকে তুই এনামুল হকের গাড়ি নিয়ে কেনো তাহেরপুর এসেছিস। হামলাকারীরা পুলিশের পিকআপে লাগানো সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের নাম সংবলিত স্টিকার তুলে ফেলতে লাগে আর লাথি মারা সহ বাড়িমারে। ওই সময় অবস্থা বেগতিক দেখে চালক গাড়িটি দ্রæত তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করান।
বাংলা ভাই আর জেএমপির বাগমারায় ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক ২০০৮ সালে প্রথম বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং দ্রæত সময়ের মধ্যে সর্বত্র চলাচলের জন্য বাগমারা থানা পুলিশকে ২টি পিকআপ উপহার দিয়েছিলেন। যা এখনো ব্যবহার করছে পুলিশ। সেই গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। উপজেলার আইন শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই সোহাইল রানা বলেন, পুলিশের পিকআপে হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।