বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারায় টিভিতে ডিসের সংযোগ দেওয়ার সময় মর্জিনা (৩৫) নামের এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার, (২০ মে) দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের মনোপাড়া গ্রামে এই দূর্ঘটনা ঘটে। মৃত মর্জিনার পিতার নাম মৃত সাহার আলী। স্বামীর নাম কমসেল হোসেন। স্বামীর বাসা একই ইউনিয়নের সুজনপালশা গ্রামে। মৃত মর্জিনা স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় গত আট মাস ধরে এক ছেলে সন্তানসহ বাবার বাড়ি মনোপাড়ায় অবস্থান করছিল।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দুপুর দুইটার দিকে মর্জিনা ছেলেসহ তার শয়নকক্ষে গিয়ে টিভিতে ডিসের লাইন দিতে লাগে। ওই সময় ডিস লাইনের সংযোগের মাথা তার হাতে পেঁচিয়ে যায়। এ সময় মর্জিনা চিৎকার করে ওঠে। মর্জিনার চিৎকারে ঘরে থাকা তার সন্তান মা’কে সংযোগ থেকে সরাতে গেলে ছেলেও বিদ্যুতায়িত হয়ে ছিটকে পড়ে যায়। ততক্ষণে মর্জিনার শরীর ডিসের তার আরো পেঁচিয়ে যায়। এতে করে হাত, গলা এবং বুকের কিছু অংশ পুড়ে যায় মর্জিনার।
মা-ছেলের চিৎকার চেঁচামেচির শব্দে প্রথমে মৃতের বড় বোন এবং পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে তৎক্ষণাৎ ঘর থেকে উদ্ধার করে। কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তবে ছেলে অক্ষত রয়েছে।
মৃত মর্জিনার ছেলের বয়স নয় বছর। মায়ের এমন নির্মম মৃত্যু স্বচক্ষে দেখে ছেলে মহিবুল হত বিহ্বল হয়ে পড়েছে। তার কান্না কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। মায়ের শোকে সারাক্ষণ আহাজারী করছে সে। কখনো কখনো মুর্ছা যাচ্ছে, সহজে কথা বলছে না। মায়ের শোকে যেন বোবা হয়ে গিয়েছে ছেলে।
মর্জিনার এমন আকস্মিক মৃত্যু প্রতিবেশীরাও মেনে নিতে পারছেন না।কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন তারাও। তারা বলছেন, মর্জিনা অত্যন্ত সহজ সরল এবং পরহেজগার মেয়ে। স্বামীর ঊশৃংখল জীবন যাপন পছন্দ করতেন না সেজন্যেই বাবার বাড়িতে থাকতেন মর্জিনা।
এ বিষয়ে হাট গাঙ্গোপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবু সিদ্দিকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি এবং ঘটনা সম্পর্কে অবহিত রয়েছি। মৃতের জানাজার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে।
Leave a Reply