বাগমারায় ডিজিএফআইয়ের ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে সেনাসদস্যের চাঁদাবাজি আটক-১ - দৈনিক বাগমারা
মঙ্গলবার , ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খেলাধুলা
  6. চাকরি
  7. জাতীয়
  8. জীবনযাপন
  9. তথ্য ও প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. বাগমারা উপজেলা
  12. বিনোদন
  13. রাজনীতি
  14. শিক্ষা ও ক্যাম্পাস
  15. সম্পাদকীয়

বাগমারায় ডিজিএফআইয়ের ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে সেনাসদস্যের চাঁদাবাজি আটক-১

প্রতিবেদক
Dainik Bagmara
সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪ ১২:০৮ অপরাহ্ণ

বাগমারা প্রতিনিধি

রাজশাহীর বাগমারায় ডিজিএফআইয়ের ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে চাঁদাবাজিকালে জনতার হাতে আটক হয়েছেন সেনাসদস্য। আটককৃত সেনাসদস্যের নাম আব্দুল গাফ্ফার। তিনি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি সাভার সেনানিবাসে কর্মরত আছেন। এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসেছে বলে জানিয়েছেন আব্দুল গাফ্ফার। ছুটিতে এসে যুক্ত হয়েছেন অপকর্মে। তবে এই অপকর্মে বেশ কয়েকজনের একটি চক্র যুক্ত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আটককৃত আব্দুল গাফ্ফারের বাড়ি বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের সৈয়দপুর-মচমইল গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুল মান্নান। তিনিও সৈয়দপুর-মচমইল মহিলা ডিগ্রী কলেজে চতুর্থ শ্রেণীর কমচারী হিসেবে চাকরী করছেন।

দেশব্যাপি আতংকের নাম হচ্ছে আয়নাঘর। আর সেই আয়নাঘরের দায়িত্বে ছিল ডিজিএফআই। তারা কৃর্তপক্ষের নির্দেশে বিভিন্ন সময় সাধারণ বা গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তিদের ধরে আয়নাঘরে রাখতেন। সেই ডিজিএফআইয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার স্বাক্ষার ও সীল সম্বলিত একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে কাজ করতে থাকে সেনাসদস্য আব্দুল গাফ্ফার। সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হয়ে উঠে আব্দুল গাফ্ফারের চাঁদাবাজির মূল হাতিয়ার।

এদিকে যেটা নিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করে আব্দুল গাফ্ফার সেখানে বাগমারার ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেই তালিকার ৪ নম্বরে নাম রয়েছে একই এলাকার বিনোদপুর গ্রামের মৃত দ্বিজেন্দ্রনাথ সরকারের ছেলে মচমইল বাজারের প্রত্যয় সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতির পরিচালক চিত্তরঞ্জন সরকারের। ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় অভিযান শুরুর তারিখ উল্লেখ রয়েছে ৯ সেপ্টম্বর ২০২৪। সেই তারিখেই অভিযান শুরু করে আটক হওয়া ওই সেনাবাহিনীর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আব্দুল গাফ্ফার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৯ সেপ্টম্বর সকাল ৯ টার পরপর চিত্তরঞ্জন সরকারের সমিতির কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। ওই সময় চিত্তরঞ্জন রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তার আগেই। পথিমধ্যে চিত্তরঞ্জনের মোবাইলে রিং বেজে উঠলে মচমইল চেয়ারম্যান মোড়ে দাঁড়িয়ে ফোন কল ধরেন। ওই সময় আটককৃত আব্দুল গাফ্ফার কথা বলেন। পরে তার সাথে দেখা করবে বলে সেখানেই দাঁড়াতে বলেন। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মোড়ে গিয়ে তার সাথে দেখা করেন। ওই সময়ে রাজশাহী যাওয়ার কথা বলে চিত্তরঞ্জনের মোটর সাইকেলে উঠে। কিছু দূর যেতেই নির্জন রাস্তায় মোটর সাইকেলটি থামাতে বলেন। পরে মোটর সাইকেল থেকে চিত্তরঞ্জন সরকারকে নামিয়ে সেখান থেকে দূরে বাঁশ ঝাড়ের পাশে নিয়ে যায়। সে সময় ডিজিএফআইয়ের হাতে কিভাবে মানুষ গুম এবং খুন হয় তার বর্ণনা করেন। এরই এক পর্যায়ে তার নাম ডিজিএফআইয়ের গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় আছে বলে ভয়ভীতি দেখায়।

গ্রেপ্তার এড়াতে ৫ লাখ টাকা দাবি করে আব্দুল গাফ্ফার। নিজের জীবন বাঁচাতে দিনের মধ্যে ৫ লাখ টাকা প্রদান করে চিত্তরঞ্জন সরকার। পরবর্তীতে তালিকা থেকে নাম পুরোপুরি বাদ দিতে আরো ১৭ লাখ টাকা দাবী করে ওই সেনা সদস্য। সেই টাকা নেয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়। বিষয়টি যেন জানাজানি করা না হয় সেটাও বলেন চিত্তরঞ্জন সরকারকে।

পরবর্তীতে মঙ্গলবার টাকা নিতে পুনরায় চিত্তরঞ্জন সরকারের বাড়িতে যায় আব্দুল গাফ্ফার। এরই মধ্যে ঘটনাটি চিত্তরঞ্জন সরকার তার নিকট আত্মীয়দের সাথে আলোচনা করেন। আলোচনা করে জানতে পারেন এটি একটি চক্র। এরপরই বিষয়টি নিয়ে জানাজানি হলে চিত্তরঞ্জন সরকারের বাড়ি থেকে পলায়নের চেষ্টা করে সেনাসদস্য আব্দুল গাফ্ফার। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মিলে আটক করে তাকে। সেই সাথে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। এমন ঘটনায় আব্দুল গাফ্ফারের দেয়া বিভিন্ন প্রমান নিয়ে বাগমারা থানা পুলিশ সহ সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ দাখিল করা হয়। অভিযোগ পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ সহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয় ঘটনাস্থলে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করলেও সেনাবাহিনীর কাছে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর নিকট টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে। তবে এই চক্রের সাথে কেকে জড়িত সেটা স্বীকার করেননি। এ ঘটনায় বাগমারা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিক জব্দতালিকা তৈরি করা হয়েছে।

ডিজিএফআইয়ের নামে রাজশাহী-০৪ আসনের প্রকাশিত গ্রেফতারি পরোয়ানা যে তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে সেটা দেয়া হলো। আদেশ করা যাইতেছে যে, কোন পারমিশন ছাড়া উক্ত ব্যক্তিবর্গকে হাড়া যাবে না। যদি ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে একমাত্র ডিজি স্যার-এর অনুমতি সাপেক্ষে ছাড়ার আদেশ দেওয়া হবে। কখন কোথায় থেকে তাদেরকে উঠানো হবে এটা কাউকে অবগতি করা যাবে না এবং উক্ত ব্যক্তিবর্গকে উঠানোর পরে কোথায় যাবে কাউকে বলা যাবে না। উঠানোর সাথে সাথে ২০ কিলোমিটার অতিক্রম করার পরে পরিবেশ বুঝে ডি সি স্যারের পিএর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

উক্ত ব্যক্তিবর্গকে উঠানোর আগে কোন ধরনের প্রশ্ন করা যাবে না এবং তাদের কোন অযুহাত মেনে নেওয়া যারে না। উঠানোর সাথে সাথে কালো স্পট দিতে চোখ বেঁধে ফেলতে হবে এবং সে কোন ধরনের যেন নিজের বা অন্যের ক্ষতি করিতে না পারে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

তাদের সেই গ্রেপ্তরি পরোয়ানা চিত্তরঞ্জন সরকার ছাড়াও আরো রয়েছেন-ইঞ্জিনিয়ার মোঃ এনামুল হক, সাবেক এম.পি রাজশাহী-০৪, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, এম.পি রাজশাহী-০৪, মোঃ সোহেল, গোয়ালকান্দি ইউ.পি, মোঃ হেলাল, সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামীলীগ, মোঃ সারোয়ার হোসেন, সভাপতি, ভবানীগঞ্জ ছাত্রলীগ, নূর মোঃ শেখ, কাচারী কোয়ালীপাড়া, সাহাদত হোসেন জীবন, সহ-সভাপতি, তাহেরপুর ছাত্রলীগ, মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, সেক্রেটারী, হামিরকুৎসা ইউ.পি, মোঃ মুনিরুল হক, সাধারণ সম্পাদক, কোনাবাড়ী, মোঃ সাইফুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা ইউ.পি, মোঃ রাসেল, নরদাস সহকারী সেক্রেটারী, মোঃ লুৎফর রহমান, ০৭ নং বাসুপাড়া ইউ.পি। প্রত্যয়ন করা যাইতেছে যে, উক্ত ব্যক্তিবর্গকে ১৫/০৯/২০২৪ ইং তারিখের মধ্যে আইনের আওতায় আনার জন্য
বিশেষ অভিযান শুরু ০৯/০৯/২০২৪ ইং। ওই প্রত্যয়নে ডিজিএফআইয়ের অনেক অফিসারের নাম পদবী ও সীল স্বাক্ষর রয়েছে।

ভুক্তভোগী চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন, আমি বিষয়টি শোনার পর আঁতকে উঠি। টেলিভিশনে আয়নাঘর সম্পর্কে খবর দেখে অনেক খারাপ লেগেছে। সেই ঘটনা এবার আমার সাথে ঘটবে। কোন অপরাধ না করলেও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। আব্দুল গাফ্ফার সেনাবাহিনীতে চাকরী করে তাই সেখান থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা দিই। পরবর্তীতে জানাতে পারি তারা একটি চক্র। সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে সে আবারও আমার বাড়িতে আসে নাম বাদ দেয়ার নাম করে ১৭ লাখ টাকা নিতে। এ সময় তাকে ধরে ফেলি আমরা। এ ঘটনায় থানা সহ সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দিলে তারা উপস্থিত হয়।

এ ঘটনায় বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয়দের হাতে আকটকৃত সেনাসদস্যের নেয়া ৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিক জব্দ তালিকা করা হয়েছে। যেহেতু আটককৃত আব্দুল গাফ্ফার সেনাবাহিনীতে কর্মরত সে কারনে তার বিচার সেনাবাহিনী করবে। টাকা উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর নিকট দেয়া হয়েছে। তারা উদ্ধার হওয়া সেই টাকা বাদীর নিকট হস্তান্তর করবে বলেও জানান তিনি।

Facebook Comments Box

সর্বশেষ - বাগমারা উপজেলা

আপনার জন্য নির্বাচিত

রাজশাহীতে হোটেল এক্স, অশ্লীল নৃত্যের নামে চলছে অসামাজিক কাজ

বিশ্বে আরও ১১৭৩ মৃত্যু, শনাক্ত প্রায় পৌনে ৫ লাখ

বাগমারায় বাঘাবাড়ি বাজারে সোনালী এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের উদ্বোধন

দল থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত : শেখ হাসিনা

বাগমারায় সালেহা ইমারত ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা শনিবার

বাগমারায় উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় ও আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

বাগমারায় বিশ্ব অহিংসা দিবস পালিত

বাগমারায় আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেমের মৃত্যুতে এমপি এনামুল হকের শোক প্রকাশ

বাগমারায় ৭ হাজার নারী পেল ইঞ্জিঃ এনামুল হকের ঈদ উপহার

বাগমারায় ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয়ায় আনন্দ মিছিল

x
error: Content is protected !!