বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারায় সংবাদ প্রকাশের পর উদ্ধার হল হতদরিদ্র মহিলাদের (ভিডব্লিউবি) সঞ্চয়ের বিপুল পরিমান টাকা। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় বেশ কয়েকটি পত্রিকার পাশাপাশি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
সংবাদ প্রকাশের একদিন পরই চেয়ারম্যান ও চৌকিদার স্বশরীরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হয়ে সমুদয় টাকা ফেরত প্রদান করেন।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের মতো গোয়ালকান্দি ইউনিয়নেও মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের মাধ্যমে হতদরিদ্র উপকারভোগী মহিলাদের সেবায় চালু রয়েছে ভার্নারেবল উইম্যান বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) সেবা কার্যক্রম। সেই কার্যক্রমের আওতায় ২ বছর মেয়াদী হতদরিদ্র উপকারভোগী মহিলাদের সেবায় ভিডব্লিউবি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। উক্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন জুড়ে ১৫৮ জন হত দরিদ্র মহিলা মাসিক ৩০ কেজি করে চাউল পেয়ে থাকে। চাউল নেয়ার সময় হতদরিদ্র মহিলারা মাসিক সঞ্চয়ের লক্ষ্যে ২০০ টাকা করে প্রদান করে। সেই টাকা উপকারভোগীদের ব্যাংকে জমা রাখা হয়।
গত ২১ মাস যাবৎ উপকারভোগী মহিলারা টাকা প্রদান করলেও তার একটি কানাকড়িও ব্যাংকে দেননি চেয়ারম্যান আলমগীর সরকার। তবে চেয়ারম্যানের ভাষ্য সেই টাকা নাকি প্রতিমাসে চৌকিদার কামরুল হাসান ব্যাংকে গিয়ে জমা দেন। সেই টাকা আদতেও ব্যাংকে জমা হয় কি না সেটা চেয়ারম্যান জানতেন না।
গত ২১ মাস যাবৎ হতদরিদ্রের সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না করে চেয়ারম্যান আলমগীর সরকার ও চৌকিদার কামরুল হাসান আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি প্রকাশ পেলে ইউনিয়ন জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
অবশেষে আত্মসাৎকৃত ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধারের পর সোমবার দুপুরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের আলোকনগর শাখায় (১১ নভেম্বর) হত দরিদ্রের হিসাব নম্বরে জমা দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, জনগণের টাকা আত্মসাতের কোন সুযোগ নেই। এর আগে ঝিকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একই ঘটনা ঘটিয়েছিল। সেই টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের বিষয়টি জানার পর সেই টাকাও উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান ও চৌকিদার আমার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে হতদরিদ্র উপকারভোগী মহিলাদের সকল টাকা জমা দেন। পরে ইউপি সচিবের সহযোগিতায় সেই টাকা উপকারভোগীদের ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে। সেই সাথে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।