শিরোনাম :
গোয়ালকান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বকুল খরাদী গ্রেফতার বাগমারায় ডিস লাইনের বৈদ্যুতিক শকে নারীর মৃত্যু বাগমারায় গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও এনজিও টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন বাগমারায় টেলিগ্রাম অ্যাপসে টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার বাগমারায় গোয়ালঘরে আগুনে পুড়ে মরল কৃষকের গরু-ছাগল,হাঁস-মুরগি বাগমারায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতের হানা, স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে মালামাল লুট আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত ফেসবুক-ইউটিউবে পক্ষে কথা বললেই গ্রেপ্তার ইউএনওর সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে পেটালেন বিএনপি নেতারা বাগমারায় সোনালী ব্যাংক থেকে গৃহবধূর টাকা নিয়ে উধাও তিন প্রতারক

এমপি এনামুল হকের দৃঢ় নেতৃত্বে জঙ্গিমুক্ত বাগমারা

  • Update Time : রবিবার, ৭ মে, ২০২৩
  • ১২

শামীম রেজা, বাগমারা প্রতিনিধি

বাগমারার নাম শুনলেই লোকজনের নির্বিঘ্নে চলাচলা বন্ধ হয়ে যেতো। রাতে তো দূরের কথা দিনের বেলাতেও বাড়ির বাহির হতে সাহস পেতো না অনেকে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠলে কানে আসতো হত্যা কান্ডের কথা। আজ এক নেতাকে হত্যা করলে কালকে অন্যজন। এভাবেই চলতো চরমপন্থী ও জঙ্গিদের কর্মকান্ড। এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ নামে খ্যাত বাগমারায় পাল্টে গেছে সার্বিক চিত্র। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৪ বছরে সকল প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে পরিনত হয়েছে শান্তির জনপদে।

বিগত সময়ে চরমপন্থী ও জঙ্গিদের হাতে হত্যা নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এখন তা আর নেই। এলাকার লোকজন শান্তিতে নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারছেন। আর এসব কিছু সম্ভব হয়েছে বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের প্রচেষ্টায়।

বিএনপি জামায়াত সরকারের সময়ে বাগমারার বিভিন্ন স্থানে চরমপন্থী ও জেএমবির হাতে খুন ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। তারা একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটিয়ে চলত। এছাড়াও চাঁদাবাজিও করত ওইসব সন্ত্রাসী সংগঠন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাদের হাতে নির্যাতিত হতে হতো। এ জন্য এক সময় বাগমারা দেশে রক্তাক্ত জনপদ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় কিছু বিপদগামীদের সহযোগিতায় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসব হত্যাযজ্ঞ চালাত। তাদের অনেকেই আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহতও হয়েছে।

১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাগমারায় চরমপন্থীদের হাতে জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদসহ ২৫ জন খুন হয়েছেন। এরমধ্যে চরমপন্থীদের হাতে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে খুন হয়েছেন যোগিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আমজাদ হোসেন, শুভডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী, গোয়ালকান্দির জাহাঙ্গীর আলম, তাহেরপুর পৌরসভার প্রথম মেয়র আলো খন্দকার, ঝিকরার ইউপি সদস্য আফসার আলী, গোয়ালকান্দির আমজাদ হোসেন বাবুল, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ, আব্দুল হামিদ মরু, মমতাজ খামারু, গোলাম মোস্তফা খামারু, আবুল হোসেন সরকার ওরফে দুলু সরকার, মোনাক্কা, উল্লেখযোগ্য।

অন্যদিকে জঙ্গিদের হাতে খুন হয় আরো আটজন। এদের মধ্যে মাড়িয়া ইউপি আওয়ামীলীগ নেতা ইয়াছিন আলী, তাহেরপুরের আ’লীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান, বিষুপাড়ার বাসদ নেতা আলী আকবর, বারুইহাটির শহিদুল ইসলাম, সাজুড়িয়ার আবু তালেব ভুট্রা, কনোপাড়ার গোলাম রাব্বানী মুকুল উল্লেখযোগ্য। এসব জঙ্গিদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরো শতাধিক মানুষ। তবে এ সরকারের সময়ে তাদের হাতে বাগমারায় কোন খুন বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। বাগমারা এখন চরমপন্থী ও জেএমবি মুক্ত।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেএমবিদের হাতে নির্যাতিতদের মধ্যে তালিকা করে ২৫ জনের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব তহবিল থেকে এ টাকা দিয়েছেন। সরকারের বড় সফলতা এসময়ে বেশ কিছু ভয়ঙ্কর জেএমবি সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরদিকে দুর্ধর্ষ কিছু চরমপন্থী ক্যাডারও ধরা পড়ে এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে মারা যায়। তাদের মধ্যে রতন ওরফে তিতাস, আক্কাছ, আবুল কানা, জালাল, ওমর, রশিদ, রাজ্জাক, আজিজ, আজগর, শামীম, কিলার মোস্তাক উল্লেখযোগ্য।

বাগমারা থেকে চরমপন্থী ও জেএমবিকে নির্মূল করা ছিল ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির নির্বাচনী অঙ্গিকার। আর এগুলো সম্ভব হয়েছে এলাকাবাসী ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায়। বর্তমানে বাগমারায় আইন শৃংখলার অবস্থা ভালো। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, টেন্ডারবাজি, খুন, ডাকাতির মতো বড় কোন অপরাধ এখন বাগমারায় সংঘটিত হয়না। আইন শৃংখলাবাহিনীর কাজের সুবিধার জন্য দুটি পিকআপ ভ্যান দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অন্যান্যযানও বাড়ানো হয়েছে। উপ-পরিদর্শকদের জন্য মোটরসাইকেল, থানার জন্য অত্যাধুনিক পিকআপ ভ্যান দেওয়া হয়েছে সাংসদের চেষ্টায়।

বিগত সময়ের জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাধারণ লোকজনকে বিপদে ফেলে মামলা-মোকদ্দমায় জড়াতেন। বর্তমান সময়ে এসে ঘটেছে তার বিপরীত। আগে প্রতিদিন যে পরিমান মামলা থানায় হতো তা থেকে অনেকটায় মুক্ত অবস্থানে ফিরে এসেছে লোকজন। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিজ স্বার্থে কাউকে আর মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় না।

আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে স্থাপন করা হাটগাঙ্গোপাড়া ও যোগিপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভবন ও প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে। বাগমারায় আইন শৃংখলার যেন কোন অবনতি না ঘটে সে কারনে একটি থানার পাশাপাশি তিনটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এবং একটি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। সেখানে থেকে ওই সকল এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বদা কাজ করে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। কখনও কোন প্রকার অনাকাংখিত ঘটনা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলে জেলা পুলিশের সদস্য ছুটে আসেন। জেলার সাথে যোগযোগের পাশাপাশি আইন শৃংখলা পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার কারনে তা সম্ভব হচ্ছে।

বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, বাগমারা একটি বিশাল উপজেলা এখানে অনেক লোকের বসবাস। তার পরও এই আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের হস্তক্ষেপে এলাকায় এখন শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করছে। বাগমারায় এখন চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এর মতো ঘটনা নেই। এছাড়া মাদকও অনেকটাই পুলিশের নিয়ন্ত্রনে। থানায় এসে কোন দালালী কিংবা হয়রানি করার সুযোগ কেউ পাই না। চরমপন্থী ও জঙ্গিদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছিল লোকজন। এখন আর কাউকে গাছের সাথে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয় না।

Facebook Comments Box

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি
২০২৫ © দৈনিক বাগমারা.কম.বিডি
error: Content is protected !!